জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের শেষ ওয়ানডে দিয়ে অধিনায়কত্বের ইতি টানলেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। শুধু জয়ে নয়, লিটন দাস এবং তামিম ইকবাল উড়ন্ত ব্যাটিং করে রেকর্ড রাঙা জয়ের পথ রচনা করে দেন। তাই ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক মাশরাফি তাদের প্রশংসা করলেন। সেইসঙ্গে তার অবর্তমানে নতুন যিনি ওয়ানডে দলের নেতৃত্বের ভার নিবেন তার উদ্দেশেও পরামর্শ দিলেন।
তামিম ও লিটনের প্রসঙ্গ টেনে মাশরাফি বিন মর্তুজা বলেন, আমার দুজন খেলোয়াড়ের খেলা ভালো লাগে, বিরাট কোহলি আর লিটন দাস। লিটন অনেকে ভালো খেলে, ভালো খেলোয়াড়। কিন্তু লিটন যতক্ষণ উইকেটে থাকে, দেখতে ভালো লাগে। অনেক আগে থেকে এটা বলে আসছি, সে শুধু উইকেটে থেকে খেলে, তা নয়, পরিকল্পনা পরিবর্তন করতে পারে। উইকেটে থাকতে পারে। লিটন বড় ইনিংস খেলতে পারে। আমার বিশ্বাস এটা সে ধরে রাখতে পারবে।
আর তামিম অবশ্যই ভালো খেলোয়াড়। সে রান করছে। সাত হাজার রানের ক্লাবে পৌঁছেছে। আসলে খেলাটা এমন যতক্ষণ ভালো খেলবেন ঠিক আছে। খারাপ খেলবেনতো অনেক কথা হবে। আমি মনে করি, যারা ফর্ম ধরে রাখছে, তারা ব্যাট করবে।
এ সময় নতুন অধিনায়কের জন্য কোনো বার্তা আছে কি না জানতে চাইলে মাশরাফি বলেন, অধিনায়ক হিসেবে নতুন যিনি আসবেন, তার চিন্তা চেতনাকে তিনগুণ বেশি বাড়াতে হবে। কেননা, জেতা অনেক সহজ। হারলে বোর্ড, মিডিয়া সবকিছুকে ক্যারি করতে হবে।
অধিনায়ক হিসেবে ৫০তম ওয়ানডে জয় অধিনায়কত্ব শেষ করা প্রসঙ্গে জানতে টাইলে তিনি বলেন, লিডারশিপ বিষয়টি ভালো। কিন্তু ক্যাপ্টেন্সি চাওয়াটা স্বার্থপরতা চলে আসে। আমি মনে করি না ক্যাপ্টেন্সি চাওয়ার প্রয়োজন আছে। যারা চাইছেন, তারা ক্যারিয়ারটা বেশ বড় করতে পারেনি। লিডারশিপ ও ক্যাপ্টেন্সি আলাদা বিষয়। একজন অধিনায়কের প্রচুর কাজ। খেলোয়াড়দের খুবই ডিস্টার্ব হয় পারিবারিকসহ বিভিন্ন দিক থেকে। যেটা ওর পছন্দ না, সেটা বারবার সামনে আসতে পারে। কোচের সঙ্গে সমন্বয় না হতে পারে। ফিটনেসে সমস্যা থাকতে পারে। সে সময় একজন অধিনায়ক পাশে থাকা। পুরো টিমের দায় দায়িত্ব নেওয়া। যে যতোই খারাপ করুক, খারাপ বলুক। অধিনায়ক সবসময়ই এটা কাঁধে নিচ্ছেন।
একজন সফল অধিনায়ক হওয়ার বিষয়ে মাশরাফি বলেন, অধিনায়কত্বের মূল কারণ ৫০টা জয়ই। তাছাড়া নিজেকে কখনও আলাদা করে মূল্যায়ন করিনি।
পাকিস্তানের সঙ্গে খেলা নিয়ে কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা এবং নিজের পারফরমেন্সের বিষয়ে বিদায়ী অধিনায়ক বলেন, আমার বিগত দিনে খুব খারাপ সময় গেছে। সেখান থেকে কিছুটা ঘুরতে পেরেছি। ইউকেট পাচ্ছি। আর পরবর্তীটা পরবর্তীতে বলা যাবে।
নেতৃত্ব ছাড়লেও খেলোয়াড় হিসেবে মোস্তাফিজ-আলামিনদের ভিড়ে নিজের জায়গা করে নেওয়ার বিষয়ে মাশরাফি বিন মর্তুজা বলেন, অবশ্যই খেলে জায়গা করে নিতে হবে। আর অধিনায়কত্ব বড় একটি চাপও। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অধিনায়কত্ব করাটাই চাপের। আমি যখন খেলোয়াড় হিসেবে থাকব, তখন নিজেকে নিয়ে ভাবার অনেক সুযোগ থাকবে। তাই অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়া আমার খেলার জন্য ভালো হয়েছে।
সিলেট থেকে অধিনায়কত্ব ছাড়ার বিষয়ে মাশরাফি বলেন, সিলেট হলেও এটা আমার দেশতো, আমার দেশই। সিলেট, ঢাকা আর খুলনা বা চট্টগ্রাম বলেন। দেশের মাটিতে অধিনায়কত্ব শেষ করেছি, এটাই আনন্দের। এর আগেও বলেছি সিলেটের মাঠ সুন্দর। আশাকরি, সিলেটে সবসময় খেলা হবে। এতো সুন্দর মাঠে অনেক খেলা হবে।